প্রবাজপুর শাহী জামে মসজিদ

প্রবাজপুর শাহী জামে মসজিদ

Khulna Satkhira

0 Reviews

প্রবাজপুর শাহী জামে মসজিদ বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ- পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার একটি প্রাচীন মসজিদ এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা, যা ১৬৯৩ সালে নির্মিত হয়। এটি একটি সংরক্ষিত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা।। এ মসজিদটি ১১০৪ হিজরির ১৯ রমজান ২ মে ১৬৯৩ খিস্টাব্দে নির্মিত। সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময় তার ফৌজদার নবাব নুরুল্লাহ খাঁ এ মসজিদের নামে লাখেরাজে ৫০ বিঘা জমি দান করেন। কথিত আছে সুবাদার পারভেজ খাঁ বাদশাহর কাছ থেকে নির্দেশ পেয়ে সেনাবাহিনীর নামাজ পড়ার জন্য এটি নির্মাণ করেন। তার নামানুসারে এ গ্রামের নাম হয় প্রবাজপুর। জেলার মধ্যে সবচেয়ে টেরাকোটা সমৃদ্ধ মসজিদ এটি। কলিগঞ্জ উপজেলা সদর হতে প্রায় ৪ কিলোমিটার দক্ষিণে এর অবস্থান।


মসজিদের বহির্ভাগস্থ আয়তাকারের আয়তন ৪৬.৯ ইঞ্চি ¬ ৩৩.৯ ইঞ্চি মসজিদটিতে ২১.৬ ইঞ্চি ¬ ২১.৬ ইঞ্চ মাপের একটি বর্গাকৃতির নামাজ ঘর রয়েছে। ৬.৯ ইঞ্চি মাপের একটি প্রশস্ত বারান্দা ছিল। কিন্তু বর্তমান বারান্দাটি আর নাই। প্রত্বতত্ত্ববিদদের মতে প্রবাজপুর শাহী মসজিদটি টাঙ্গাইলের আতিয়া জামে মসজিদ, যানিয়া দীঘি, নারায়ণগঞ্জের শাহী মসজিদ এবং পশ্চিম লট্রন ও চামকাটি মসজিদের অনুরূপ এক গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ। অন্যদিকে বারান্দায় ছিল তিন গম্বুজ। বাংলা ১৩৬২ সনে মসজিদ সংস্কার করার সময় মসজিদের মূল পূর্ব দেয়ালের (বর্তমান লুপ্ত) দিকে একটি ছোট দেয়াল জুড়ে দিয়ে মূল বারান্দার এলাকাসহ আয়তাকার বাধন উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ তৈরী করা হয়েছিল শুক্রবারের জুম্মার নামাজ আদায় করার জন্য। মসজিদের মূল কক্ষ বারান্দার উপর ও দক্ষিণ দেয়াল এবং বারান্দার প্রতি অংশে একটি করে মোট ৪টি দরজা ছিল। এছাড়া সম্মুখ দেয়ালে এবং বারান্দার ও মূল কক্ষের মধ্যবর্তী দেয়ালের প্রত্যেকটিতে ৩টি করে ৬টি মোট ১০টি দরজা ছিল। উত্তর ও দক্ষিণ অংশের ৪টি দরজার নিম্নভাগ সম্প্রতি ছোট পাতলা প্রাচীর দ্বারা আংশিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মসজিদের প্রধান দরজাটি ৪.৭ ইঞ্চি প্রশস্ত। মসজিদের পশ্চিম দিকের দেয়ালে ৩টি অলঙ্কৃত মেহরাব রয়েছে। মাঝ খানের মেহরাবটি প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী কিছুটা বহিবর্ধিত এবং পার্শ্ববর্তী দুটি থেকে আকারে বড়। এর অলংকরনগুলো সুন্দর। তিনটি মেহরাবের খিলানই বহু ফলিযুক্ত এবং বহু পার্শ্ববিশিষ্ট স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত। এছাড়া মেহরাবের বহিঃ প্রান্ত রেখায় ফলির সংযোগস্থলে পতাকা আকারে বড় নকশা রয়েছে। এবং স্প্যান্ড্রলে দুটি করে প্রস্ফুটিত পদ্মের বুটি আছে। মেহরাবের তিনটিতেই খিলানের কাঠামোর প্রান্তে খাড়া ও লম্বভাবে প্রচলন অনুযায়ী বক্রাকার গুল্মের নকশা রয়েছে। এ নকশা তিনটি এক এক রকম। উত্তর পার্শ্বেরটিতে পালানুযায়ী প্রস্ফুটিত বড় পদ্ম এবং ডিজাইন রয়েছে। কেন্দ্রেরটিতে বক্রলতার ভাজের মধ্যে উভয়দিকে বড় পতাকার নকশা করা হয়েছে। এবং দক্ষিণ পার্শ্বেরটিতে প্রস্ফুটিত সুন্দর বড় পদ্মের সমাবেশ দেখা যায়। একটি ফার্সি পরওয়ানা থেকে জানা যায়, মসজিদটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৫০ একর জমি দান করা হয়েছিল।। কিন্তু বর্তমান মসজিদের দখলে মাত্র ৩ একর জমি রয়েছে