জোড়া শিবমন্দির
দেশের কয়েকটি বিখ্যাত মন্দিরের মধ্যে একটি খুলনার জোড়া শিবমন্দির। এই মন্দিরের খ্যাতি রয়েছে দেশ ও দেশের বাইরে। তবে প্রাচীন এই মন্দির লাগোয়া জোড়া বটগাছ নিয়ে লুকিয়ে আছে গল্পের ডালপালা। প্রায় তিনশ’ একুশ বছরের পুরনো এ জোড়া শিবমন্দির। শিল্পনগরী খুলনা জেলার ৭৪টি প্রত্নস্থলের মধ্যে একটি হলো এ জোড়া শিবমন্দির। এই মন্দির শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত।
অবকাঠামোগত সৌন্দর্য ও সনাতন ধর্মের ঐতিহ্যের কারণে অনেকটা ছায়াঘেরা এ মন্দিরের বটবৃক্ষের নিচে মানুষ বিশ্রাম নিচ্ছে। কেউ কেউ জোড়া বটবৃক্ষের নিচে পূজা করছেন। পেছনের গেট থেকে এসে অনেকে মন্দির এরিয়ার টিউবওয়েল থেকে পানি নিচ্ছেন। মন্দিরের পাশে পুরোহিতের থাকার ঘর রয়েছে। জোড়া শিবমন্দিরের তিনটি গেট ও চারপাশে প্রাচীর রয়েছে। বর্তমানে মন্দির দু’টির মধ্যে কালো পাথরে নির্মিত দু’টি শিবলিঙ্গ আছে। মন্দিরের দেয়ালে লেখা রয়েছে প্রতিষ্ঠাতার নাম কৃষ্ণ রামবসু, ১১০৪ বঙ্গাব্দ। একইসঙ্গে দেওয়ালে জোড়া শিবমন্দিরের দাতাদের তালিকা রয়েছে।
জোড়া শিবমন্দিরের প্রতিটির বৈশিষ্ট্য অপরিসরের বর্গাকার মূর্তিকোঠা, কৌণিক খিলান-দরজা, বাঁকা কার্নিস, আট চালাকার শিখর এবং পলেস্তারা ও চুনকাম করা দেয়াল। ভেতরের পরিমাপ ২.৮৫ মি./৯’-৪” ও ২.৮৫ মি./ ৯’-৪” এবং বাইরের পরিমাপ ৪.৬০ মি./১৫’-১” ও ৪.৬০ মি./১৫’-১” । প্রতিটি খিলান-দরজার ওপর ফলক স্থাপনের উপযোগী শিল্পভূমি রয়েছে। মন্দিরের কার্নিসের নিচের দু’সারি খোপে নকশা শোভা পাচ্ছে। মন্দিরের চূড়ায় বাকসাকার হর্মিকা থেকে একটি শীর্ষদণ্ড বেরিয়ে আছে। গাঁথুনির ইটের আকার বেশ ছোট এবং মসলা হিসেবে চুনমিশ্রিত ইটের গুঁড়া ব্যবহৃত হয়েছে।
Instruction
খুলনার মূল শহরের ৫ নম্বর ঘাট এলাকায় এটির অবস্থান। কালের সাক্ষী খুলনার সবচেয়ে প্রাচীন মন্দিরটি বৈচিত্র্যময়তার কারণে দেশি-বিদেশি প্রচুর পর্যটকের আগ্রহের স্থান দখল করে রয়েছে। খুলনা রেলস্টেশন এলাকার বিআইডব্লিউএ ভবনের উত্তর দিকের অনতিদূরে রিকশায় কিংবা পায়ে হেঁটে গেলে সহজেই চোখে পড়ে ৫ নম্বর ঘাট। রাস্তার পশ্চিম পাশেই অবস্থিত ঐতিহাসিক জোড়া শিবমন্দির। এখানে পাশাপাশি দু’টি পূর্বমুখী মন্দির দাঁড়িয়ে আছে। দু’টি মন্দিরই একই আকৃতির। মন্দির লাগোয়া পশ্চিম পাশে রয়েছে বিশাল আকৃতির প্রায় ৫শ’ বছরের পুরনো জোড়া বটগাছ।