নুহাশ পল্লী
নুহাশ পল্লী প্রতিদিন সকাল ৯ঃ০০ মিঃ থেকে সন্ধ্যা মাগরিবের আযান পর্যন্ত খোলা থাকে। আমাদের কোন সাপ্তাহিক বন্ধ নাই। বছরের ৩৬৫ দিনই খোলা থাকে । বছরের ২ দিন ১৩ নভেম্বর (হুমায়ূন আহমেদ স্যারের জন্মদিন) এবং ১৯ জুলাই ( স্যারের পৃথিবী চলে যাওয়ার দিন) সকল দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত । অন্যান্য দিন প্রবেশ ফি জনপ্রতি ২০০ টাকা । ১০ বছরের নিচে বাচ্চা, ড্রাইভার ও প্রতিবন্ধীদের প্রবেশ ফি লাগবেনা। আমাদের ভিতরে কোন খাবার রেস্টুরেন্ট নেই । তবে ১৫ জনের উপরে হলে অর্ডার নিয়ে খাবার রান্না করে পরিবেশন করা হয় এই সম্পর্কে বিস্তারিত আমাদের প্যাকেজ ট্যুর অপশানে পাবেন। নুহাশ পল্লীতে যা যা দেখবেন
# হুমায়ূন আহমেদ এর প্রিয় বাস ভবন হোয়াইট হাউজ # ঘেটু পুত্র কমলা ও নয় নাম্বার বিপদ সংকেত সিনেমার শুটিং ফ্লোর # লীলাবতী দিঘী # চন্দ্র কথা সিনেমার জমিদারী ঘাট # বিশেষ উদ্দেশ্যে লাগানো তাল গাছ # পবন ঝাউ গাছ # ভূত বিলাস # শ্বেত পাথরের শান বাঁধানো ঘাট ও পূর্ণিমা উৎসব # দিঘী লীলাবতী # মাটির তৈরি ঘর ও পানির কূয়া # শিশু পার্ক # রূপবতী মৎস্য কন্যা # মানুষের মাথার বিশাল কঙ্কাল # মা ও ছেলের ভাস্কর্য # প্রাগৈতিহাসিক যুগের প্রানী (ডাইনোসর) # কৃত্তিম পাহাড় ও চীন দেশের দৈত্য # বিশাল ব্যাঙের ছাতা # বৃষ্টি বিলাস #পদ্ম পুকুর # কল্পনার লীলাবতীর ভাস্কর্য # তেঁতুল বৃক্ষ ও ভূত বিলাস # হুমায়ূন আহমেদের সমাধি # লিচু বাগান # কাক দেশান্তরী আম বাগান # হুমায়ূন আহমেদ এর মুরাল # ট্রি হাউজ # সুইমিং পুল # বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঔষধি বৃক্ষের বাগান # ১০০ বছরে ১বার ফল হয়ে মারা যায় এমন তাল গাছ (তালি পাম) # মাটির প্রাচীর # পণ্ড আইল্যান্ড # খেলার মাঠ # মাটির ঘর #গন্ধব ফলের গাছ,ধুপ গাছ সহ প্রায় ৩৫০ প্রজাতির গাছ রয়েছে। বোটানির বিভাগের ছাত্র ছাত্রীদের জন্য নুহাশ পল্লী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন একটি স্থান। আয়োর্বেদিক ডাক্তারদের জন্য এটি বাংলাদেশের তীর্থস্থান বলে বিবেচিত।
Instruction
নুহাশ পল্লী ঢাকা বিভাগের গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানার অন্তর্গত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গ্রাম খ্যাত পিরুজালী গ্রামে অবস্থিত ।গাজীপুর জেলার দক্ষিন দিক থেকে অর্থ্যাৎ ঢাকা দিক থেকে নুহাশ পল্লীতে আসতে হলে ময়মনসিংহ রোডে চলে এমন যেকোন গাড়িতে উঠে হোতাপাড়া বাস স্টেশনে নেমে অটোরিক্সা, সিএনজি নিয়ে সরাসরি আসা যাবে। গাজিপুর জেলার উত্তর দিক থেকে আসতে হলেও হোতাপাড়া বাস স্টেশনে নেমে একই ভাবে আসা যাবে।
Travel Cost
ঢাকা থেকে নুহাশ পল্লী আসতে হলে মহাখালী টাঙ্গাইল বাস স্টেশন থেকে হোতাপাড়া বাস স্টেশন পর্যন্ত বাস ভাড়া ৮০টাকা-১০০ টাকা । হোতাপাড়া থেকে অটোরিক্সা , সি এন জি সরাসরি গেলে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা সর্বোচ্চ ভাড়া লাগতে পারে।
Warning
Articles
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঔষধি বৃক্ষের বাগান
নুহাশ পল্লীর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ বাংলা সাহিত্যের সম্রাট কিংবদন্তী লেখক হুমায়ূন আহমেদের স্মৃতি । নুহাশ পল্লীর যেখানেই হাঁটবেন সেখানেই আপনার প্রিয় লেখকের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। হুমায়ূন আহমেদ নুহাশ পল্লীতে যা তৈরি করেছেন তার সব কিছুই নিজের প্রয়োজনে। এখানকার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হল এখানে হুমায়ূন আহমেদ তৈরি করেছেন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঔষধি বৃক্ষের বাগান।যার প্রতিটি বৃক্ষ তাঁর নিজের হাতে লাগানো। এই বাগানে প্রায় ৩০০- ৩৫০ প্রজাতির ঔষধি বৃক্ষ রয়েছে- যা এখন বোটানির ছাত্র ছাত্রী , আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ও বৃক্ষপ্রেমীদের এক রিসার্চ সেন্টারে পরিনত হয়েছে । এক সময় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে দুর্লভ ও বিলুপ্ত ঔষধি বৃক্ষের জন্য এখানে সবাই আসবেন ।
হুমায়ূন আহমেদ যখন অসুস্থ অবস্থায় আমেরিকা তে ছিলেন তখন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শুয়েও নুহাশ পল্লীর এই বৃক্ষগুলোকে দেখতে চাইতেন ।আমরা কিছু দিন পর পর বৃক্ষগুলোর ছবি ভিডিও করে ইমেল করতাম। একজন মানুষ কতটুকু বৃক্ষপ্রেমী হলে নিজে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করেও নিজ হাতে লাগানো বৃক্ষের খোঁজ নিতে ভুলতেন না।
মাটির প্রাচীর
নুহাশ পল্লীতে ঢোকার মুখে গেলেই চোখে পড়বে বিশাল মাটির দেয়াল । মাটির দেয়ালের ভিতর দিকে পুরো দেয়ালের গায়ে রয়েছে ছোট ছোট চার কোনা আকৃতির খোপ খোপ/ বক্স বক্স করা এটি হুমায়ূন আহমেদ তার প্রিয়জন কারো জন্মদিন বা অন্যান্য কোন অনুষ্ঠানে/কাউকে সারপ্রাইস দিতে চাইলে সেই খোপ খোপ বক্স গুলিতে মোমবাতি জ্বালিয়ে তাকে সারপ্রাইজ বা উইশ করতেন।সুইমিং পুলঃ
মানুষের মাথার বিশাল কঙ্কালঃ
সুইমিং পুলের উপরে পূর্ব দিকে রয়েছে বিশাল আকৃতির মানুষের মাথার এক অদ্ভ্রুত কঙ্কাল যার মুখ হা করে আছে এবং তার মুখ থেকে সুইমিং পুলে পানি পড়ছে । তার ঠিক ডান পাশে রয়েছে মাটির টালির ছাউনি দেয়া চারদিক খোলা একটি ঘর। বিকালে এইখানে হুমায়ূন আহমেদ তার পরিবারের সকলকে নিয়ে নাস্তা করতেন।হুমায়ূন আহমেদ এর প্রিয় বাস ভবন “হোয়াইট হাউজ”
নুহাশ পল্লীতে হুমায়ূন আহমেদ যে বাড়িটিতে থাকতেন সেটিকে সবাই “হোয়াইট হাউজ “বা মেইন বিল্ডিং বলে ডাকেন। এটি যখন নির্মাণ করা হয় তখন ইরাকের এর সঙ্গে আমেরিকার যুদ্ধ চলছিল । ইরাক- আমেরিকা যুদ্ধ ও বিল্ডিংটির নির্মাণের সময় টি স্মৃতি হিসাবে রাখার জন্য হুমায়ূন আহমেদ সেই নির্মাণাধীন বাড়িটিতে একটি নাটকের শুটিং করেন যার নাম “চৈত্র দিনের গান ” । বাড়িটির ডিজাইন করেছেন প্রখ্যাত ডিজাইনার হুমায়ূন আহমেদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ার এম এ করিম । তিনি মনের মাধুরী মিশিয়ে ডিজাইন করছেন । জোছনা ও বৃষ্টি ছিল হুমায়ূন আহমেদের খুব প্রিয়। তাই ডিজাইনার ছাদ ভেঙ্গে যেন জোছনা ও বৃষ্টি ঘরের ভিতর প্রবেশ করতে পারে সেই ব্যবস্থা রেখেছেন অনেকটা আকাশ ভেঙ্গে জোছনা পড়ার দৃশের মত । বাড়ীটিতে মোট ৯ টি রুম আছে। বাইরে থেকে দেখলে বোঝাই যাবেনা এর ভিতরে কি অদ্ভুত সুন্দর । এই অদ্ভুত সুন্দর জায়গাটিতে বসে হুমায়ূন আহমেদ লিখেছেন তার অনেক সুন্দর সুন্দর উপন্যাস।হুমায়ূন আহমেদ এর মুরালঃ
হুমায়ূন আহমেদের বাসস্থান হোয়াইট হাউজের সামনে তৈরি করা হয়েছে বিশাল আকৃতির হুমায়ূন আহমেদের মুরাল । নুহাশ পল্লীর গেইট দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করলেই প্রথমে আপনার চোখে পড়বে এই বিশাল আকৃতির মুরালটি ।এটি ২৫ দিন সময় কাজে লাগিয়ে নির্মাতা আর্কিটেক্ট হাফিজ উদ্দিন বাবু নির্মাণ করেছেন এই গুরুত্তপূর্ণ এই মুরালটি। নুহাশ পল্লীতে বেড়াতে যাওয়া এমন দর্শনার্থী খুব কমই পাওয়া যাবে যিনি প্রিয় লেখকের এই মুরালের সঙ্গে ছবি তোলার সুযোগ হাত ছাড়া করেছেন। এটি হুমায়ূন আহমেদের ৬৭ তম জন্মদিনে তাঁর স্ত্রী – প্রখ্যাত অভিনেত্রী, সংগীত শিল্পী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওন ও হুমায়ূন আহমেদের কনিষ্ঠ দুই পুত্র নিষাদ হুমায়ূন ও নিনিথ হুমায়ূন উদ্ভোধন করেন।