ভাটপাড়া নীলকুঠি
গাংনী উপজেলার অন্যতম উলেস্নখযোগ্য নীলকুঠি গাংনী থানার সাহারবাটি ইউনিয়নের ভাটপাড়ায় অবস্থিত। ১৮৫৯ সালে স্থাপিত ধ্বংস প্রায় এই নীলকুঠিটি ইট, চুন-শুরকি দ্বারা নির্মাণ করা হয়। এর ছাদ লোহার বীম ও ইটের টালি দিয়ে তৈরী। এই কুঠির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কাজলা নদী। গাংনী উপজেলার উত্তর প্রান্ত ঘেঁষে ঐতিহাসিক কাজলা নদীর তীরে অবস্থিত জাতীয় জীবনের ও সভ্যতার স্মারক ভাটপাড়া নীলকুঠি। যা আজও ব্রিটিশ বেনিয়াদের নির্যাতনের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অযত্ন অবহেলায় এবং সংস্কারের অভাবে কুঠিবাড়িটি ধ্বংসের পথে। ভাটপাড়া নীলকুঠিটি কাজলা নদীর তীরে ২৩ একর জমির ওপর অবস্থিত। সাহেবদের প্রমোদ ঘর ও শয়ন রুম সংবলিত দ্বিতল ভবনটি জীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। কাঁচারি ঘর, জেলখানা, মৃত্যুকুপ ও ঘোড়ার ঘর বিলুপ্ত প্রায়। দামি মার্বেল পাথর আর গুপ্তধনের আশায় একসময় ভেঙে ফেলা হয়। এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বর্তমানে সরকারের রাজস্ব বিভাগের ওপর ন্যাস্ত। এরই মধ্যে ভবনের ইট ও পাথর চুরি হয়ে গেছে। দামি ও ফলদ বৃক্ষ হয়েছে নিধন। বাকি অংশে গড়ে উঠেছে আবাসন প্রকল্প। ধীরে ধীরে বেদখল হয়ে যাচ্ছে জায়গাজমি। গোটা কুঠি এলাকা বর্তমানে গোচারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। কুঠিভবন ও নীলগাছ আজও স্মরণ করিয়ে দেয় নীলকরদের অত্যাচার ও নির্যাতনের কথা। প্রচলিত আছে গভীর রাতে এখানে এসে দাঁড়ালে শোনা যায় নর্তকীদের নূপুরের আওয়াজ ও চাষিদের বুকফাটা আর্তনাদ। কালের সাক্ষী ভাটপাড়া কুঠিবাড়িতে এখনও অনেক পর্যটক এলেও ধ্বংসাবশেষ দেখে হতাশ হয়েই ফিরতে হয়। এলাকাবাসীর দাবি পরাধীনতার শিকলে বন্দি থাকাকালীন শোষক এবং শাসকদের নির্যাতনের নির্মম স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক ভাটপাড়া নীলকুঠি সংরক্ষণে হতে পারে এক অনিন্দ্য সুন্দর দর্শনীয় স্থান। গড়ে তোলা যেতে পারে একটি পর্যটন কেন্দ্র। এ ব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
Instruction
কিভাবে যাবেন ঃ রাজধানী শহরের সঙ্গে সরাসরি বাস যোগাযোগ আছে। আন্তঃজেলা বাস যোগাযোগব্যবস্থা আছে। গাবতলী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে মেহেরপুর জেলায় ভ্রমণের জন্য সরাসরি বাস পাওয়া যায়। নন এসি বাসের ভাড়া ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা এবং এসি বাসের ক্ষেত্রে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত।
এছাড়া রাজশাহী থেকে মেহেরপুর জেলার সরাসরি বাস যোগাযোগ আছে। গোল্ডেন স্টার এবং আশার প্রদীপ পরিবহন নামের দুইটি বাস সার্ভিস চালু আছে। গোল্ডেন স্টার পরিবহন রাজশাহীর ভদ্রার মোড় থেকে সকাল সাড়ে সাতটায় এবং আশার প্রদীপ পরিবহন বিকাল সাড়ে পাচটায় বাস ছাড়ে। এছাড়া বিআরটিসির বাস সার্ভিস চালু আছে যা রুয়েট গেটের নিকট থেকে দুপুরে মেহেরপুরের উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে আসে। ভাড়া ৩৫০ টাকা।
বরিশাল থেকে আলসানি-বরিশাল ডিলাক্স নামের বাস সার্ভিস চালু আছে।বাগেরহাট থেকে খুলনা, যশোর, ঝিনাইদহ হয়ে মাছরাঙ্গা ট্রাভেলস নামের বাস সার্ভিস চালু আছে। বাগেরহাট থেকে বাসটি দুপুর ২ঃ৩০ এ মেহেরপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে।মেহেরপুর জেলা সদর থেকে বাস কিংবা স্থানীয় যেকোন পরিবহণ ব্যবস্থায় সরাসরি আমঝুপি নীলকুঠিতে যেতে ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগে।
কোথায় থাকবেন ঃ মুজিবনগর মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ পর্যটন করপোর্রেশনের হোটেলে আবাসনের সুব্যবস্থা আছে। এ ছাড়া জেলা পরিষদের স্থাপিত ডাকবাংলোয় ৩টি ভিআই পি কক্ষে আবাসনের ব্যবস্থা আছে।এছাড়া আছে অনাবিল আবাসিক হোটেল মানে ভালো ।
কোথায় খাবেন ঃ মেহেরপুরের বিশেষ খাবারের মধ্যে রয়েছে ”সাবিত্রী” ও “রসকদম্ব” নামক মিষ্টি। দেশের আর কোথাও এই মিষ্টি বিক্রিয় করা হয় না। আর আমের মৌসুমে মেহেরপুর গেলে পাকা আম খেতে ভুল করবেন না।